পিরোজপুর থেকে মোঃ নুর উদ্দিন ॥ করোনা মহামারীর কারনে লকডাউনে পিরোজপুর শহরে অনেকাংশে মাদকের ভয়াবহতা বেড়ে যাওয়ার অভিযোগ রয়েছে। জেলার বিভিন্ন উপজেলা সহ পিরোজপুর শহরে মাদকের ব্যবহার বেড়ে গেছে অনেকগুন বেশি। লকডাউনের সুযোগে নির্বিচারে মাদক ব্যবসা করে যাচ্ছে মাদক ব্যবসায়ীরা। সন্ধ্যা হলেই শহরের বেশ কয়েকটি চিহ্নিত জায়গায় দেখা যায় চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ীদের আনাগোনা। তবে অন্যান্য মাদকের চেয়ে চাহিদা বেড়ে গেছে ইয়াবা ট্যাবলেটের। লকডাউনে এ সকল সুবিধাভোগী মাদক ব্যবসায়ীরা হোম ডেলিভারী দিচ্ছে ইয়াবা ট্যাবলেট। আর এ ইয়াবার মরোন ছোবলে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে স্কুল কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা, উঠতি বয়সের ছেলে মেয়ে ও যুব সমাজের বড় একটা অংশ। এতে শংকিত অভিভাবক ও স্থানীয়রা। পিরোজপুর জেলার চারপাশে নদী থাকার ফলে সহজেই ইয়াবা ঢুকে যাচ্ছে শহরে। পিরোজপুর শহরকে পশ্চিমে বলেস্বর নদী বাগেরহাট থেকে এ নদী পেরিয়ে সহজেই ঢুকতে পারে ইয়াবা অন্যদিক কঁচা নদীর অন্য পাশে কাউখালী যে রুটটি বরিশাল ঝালকাঠি হয়ে নেছারাবাদ পরে কাউখালীর বেকুটিয়া হয়ে নদী পেরিয়ে শহরে প্রবেশ করে। মহাসড়ক ও আঞ্চলিক মহাসড়কে পুলিশের চেকপোষ্ট থাকলেও নদীপথে নেই তেমন কোন পুলিশের টহলটিম বা চেকপোষ্ট ,ফলে এ সুযোগে সহজেই মাদকের চালান নদীপথে পিরোজপুর শহরে ঢুকে যাচ্ছে এবং তা ছড়িয়ে দিচ্ছে বেশ কিছু ব্যবসায়ীরা। শুধু পিরোজপুর শহরেই নয় মাদকের এ ভয়াবতা বৃদ্ধি পেয়েছে মঠবাড়িয়া, ভান্ডারিয়া, নাজিরপুর সহ বিভিন্ন উপজেলাতেই। স্থানীয়রা ও সুশিল সমাজের ব্যাক্তিবর্গের মতে লকডাউনের কারনে বাইরে বের হতে পারছে না স্কুল কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা, ও যুব সমাজের বড় একটা অংশ ফলে তারা নিমিশেই ধঅবিত হচ্ছে ইয়াবাসহ মাদকের দিকে। সারাদিন ঘরে বসে মোবাইল নিয়ে ঘাটাঘঅটি আর সন্ধ্যা হলেই শুধু অপেক্ষা কখন মাদক সেবন করবে এমটাই অভিযোগ রয়েছে অভিভাবকদের। পুলিশ প্রশাসন দিন রাত্র লকডাউন নিয়ে ব্যাস্ত থাকার ফলে সুযোগ পেয়ে যাচ্ছে মাদক ব্যবসায়ীরা। ফলে তারা উন্মুক্তভাবে ঘুরে ঘুরে ইয়াবার হোম ডেলিভারি দিচ্ছে বাসায় বাসায়। শহরের সিও অফিস মোড়, বাইপাস সড়ক, বলেস্বব্রিজের গোড়া সহ বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতে দেখা যায় মাদক ব্যবসায়ী ও সেবীদের অধিকাংশদের। পুলিশ প্রশাসনের চাপ কমে যাওয়ায় এসব মাদক ব্যবসায়ীরা তাদের সম্রাজ্য কায়েম করছে। এমিনেন্ট বয়েজ পিরোজপুর এর সাধারণ-সম্পাদক -জনাব নিয়াজ মোর্শেদ বলেন, মাদকের ভায়াবহতা লকডাউনে বৃদ্ধি পেয়েছে বলে অভিযোগ অনেকেরই। মাদকের ভয়াবতা বাড়লে সমাজের অপকর্ম বেড়ে যায়। তাই অচিরেই এর লাগাম টানা দরকার। সাপোর্ট মানব কল্যাণ সংস্থার সিনিয়র সহ-সভাপতি জনাব নাসির উদ্দিন সিকদার সাগর জানান, পুলিশের নজরদারী বাড়ানো দরকার। মাদকের ভয়াবহতা বৃদ্ধি পেলে জেলার ছাত্র সমাজ যুবসমাজ ধ্বংস হয়ে যাবে। মাদকের ব্যাপারে পুলিশের বেশি বেশি অভিযান পরিচালনার মাধ্যমে মাদক ব্যবসায়ীদের নিমূল করতে হবে। পুলিশ সুপার হায়াতুল ইসলাম খান জানান, লকডাউন নিয়ে জেলা পুলিশ দিন রাত্র ব্যাস্ত থাকলেও পুলিশের অভিযান অব্যহত রয়েছে। মহাসড়ক ও আঞ্চলিক মহাসড়কে পুলিশ চেকপোষ্ট রয়েছে তবে নদী পথে নজরদারী কিছুটা কম রয়েছে। মাদক ব্যবসায়ী ও মাদক সেবীদের কোন প্রকার ছাড় দেয়া হবে না। পুলিশের অভিযান অব্যহত আছে এর পরেও যদি কেউ সীমা লংঘন করতে চায় তাহলে তার বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
Leave a Reply